শিরোনাম

তেল ব্যবসায়ীরা কথা রাখেননি, ভোক্তা অধিদপ্তরের আক্ষেপ

ডয়চে ভেলের প্রতিবেদন।। বাংলাদেশে ব্যবসায়ীরা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন অন্তত রোজায় ভোজ্যতেল, বিশেষ করে বোতলজাত সয়াবিন তেলের কোনো সংকট হবে না৷ জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক জানিয়েছেন, সংকটের কারণ জেনে ব্যবস্থা নেবেন তারা৷

রোজার প্রথম দিনে ঢাকার বাজারে ক্রেতারা জানিয়েছেন এককভাবে বোতলজাত সয়াবিন তেল তারা কিনতে পারছে না৷ সাথে আরো অনেক পণ্য কিনলে দুই বা পাঁচ লিটারের এক বোতল সয়াবিন তেল পাওয়া যায়৷ ভোজ্যতেলের সংকটের জন্য খুচরা বিক্রিতেরা দুষছেন পাইকারি বিক্রেতাদের৷ কেউ কেউ জানিয়েছেন তাদেরও তেল কেনার জন্য অন্য ভোগ্যপণ্য কিনতে হয়েছে৷ তাই খুচরা বিক্রেতারা সেভাবেই বিক্রি করছেন৷ পরিস্থিতির জন্য ভোজ্য তেল আমদানিকারকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেয়ায় ক্ষোভ জানিয়েছে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ৷ ভোজ্যতেল ব্যবসায়ীরা কথা দিয়েও কথা না রাখায় আক্ষেপ প্রকাশ করেছেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ আলীম আখতার খান৷ 

রোজার বাজারের মিশ্র চিত্র

গৃহিণী জেসমিন লিপি রোজার বাজার করেছেন কারওয়ান বাজার থেকে৷ বিভিন্ন পণ্যের দাম নিয়ে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন৷ বলেন, ‘‘এবার লেবুর হালি ১২০ টাকা, যা আমাদের মতো মানুষের পক্ষে কেনা কঠিন৷ ভালো বেসনের কেজি ১৬০ টাকা৷ এটা গত রোজার চেয়ে অনেক বেশি৷ তরমুজ ৮০ টাকা কেজিও আছে, তবে সেটা ভালো না মন্দ তার কোনো নিশ্চয়তা নাই৷''

ডিমের দাম নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করলেও মাছ, মুরগি আর গরুর মাংসের দাম বেড়েছে বলে জানান তিনি৷ বলেন, ‘‘গরুর মাংসের কেজি ৭৮০ টাকা৷ মাছের দাম বেড়েছে৷ যে চিংড়ি মাছের কেজি ছিল ৬০০ টাকা সেটা আজকে (রোববার) দেখলাম ৯০০ টাকা৷ শলা চিংড়ি এক হাজার ৬০০ টাকা কেজি,” বলেন তিনি।

আরেকজন ক্রেতা নাজমুল হক তপন বলেন, "রোজার পণ্যের দাম বুঝতে হলে শবে বরাতের আগের সঙ্গে তুলনা করতে হবে৷ ৪০ টাকার বেগুন এখন প্রথম রোজায় ১০০-১২০ টাকা কেজি৷ ছোলার কেজি ছিলো ১২০ টাকা, এখন হয়েছে ১৪০ টাকা৷ আলুর দামও বেড়েছে৷ আর বাজারে তো সয়াবিন তেল নাই। অনেক পণ্য কিনলে তখন তারা তখন সয়াবিন তেল দেয়। আলাদা বিক্রি করে না৷''

ক্রেতারা বলছেন, কিছু পণ্যের দাম স্থিতিশীল থাকলেও বেশ কিছু পণ্যের দাম বেড়েছে৷ গত রোজার তুলনায় এবার নিত্যপণ্যের দাম গড়ে ১৫-২০ শতাংশ বেড়েছে৷ পর্যাপ্ত মজুত থাকার পরও ব্যবসায়ীরা সয়াবিন তেলের কৃত্রিম সংকট তৈরি করেছে বলে অভিযোগ করেন তারা৷

মুদি দোকানদার রহিম মিয়া বলেন, ‘‘সয়াবিন তেলের দাম বাড়েনি তবে তেল আমরা পাচ্ছি না। আগাম টাকা দিয়েও মিলছে না। কয়েক বোতল দেয় তাও এর সঙ্গে আমাদের আরো অনেক কিছু কিনতে বাধ্য করা হয়৷ ফলে আমরা শুধু তেল বিক্রি করি না৷ অন্য আরো ১০টি পণ্য কিনলে সঙ্গে তেল বিক্রি করি৷ আমরা যেভাবে আনি সেভাবেই বিক্রি করি৷''

তিনি জানান, "মুদি পণ্যের মধ্যে তেলেরই সংকট৷ চিনির দাম বাড়েনি৷ অন্যান্য পণ্যের দাম স্থিতিশীল আছে৷''

আর সবজি বিক্রেতা রুবেল মিয়া জানান, লেবুর দাম অনেক বেড়েছে৷ লেবুর হালি রোজার প্রথম দিনে ১২০ টাকা হয়েছে৷ তবে ছোট লেবুর হালি ৬০ টাকা৷ ভালো মানের বেগুন বিক্রি করেছেন ১৬০ টাকা কেজিতে৷ কাঁচামরিচ, ধনে পাতার দামও বেড়েছে বলে জানান৷ কচুর লতির দাম ১০০ টাকা কেজি৷

তিনি বলেন, "গতবাবের সঙ্গে তুলনা করলে কিছু পণ্যের দাম বেড়েছে৷ আবার দুই-একটির দাম কমেছে৷ ফুলকপি ও পেঁপের দাম কমেছে৷ তবে রোজার প্রথম সাত দিন দাম বাড়তিই থাকে৷ পরে ঠিক হয়ে যায়৷''

রোববার সকালে বাজার পরিস্থিতি দেখতে কারওয়ান বাজারে যানজাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ আলীম আখতার খান৷ বাজার পরিদর্শনের পর তিনি ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘রোজার প্রথম দিনের বাজার পরিস্থিতি নিয়ে আমার মিশ্র প্রতিক্রিয়া আছে৷ বাজারে সয়াবিন তেল আছে তবে সীমিত৷ আবার দেখা যাচ্ছে কেউ কেউ প্রয়োজনের অতিরিক্ত কিনছেন৷ একজন ১০ লিটার তেল নিলেন৷ কিন্তু পাঁচ লিটারে তো গোটা মাস চলে যায়৷ এই যিনি ১০ লিটার নিলেন তিনি তো আরেকজনের ক্ষতি করলেন৷ তার কারণে সংকট তৈরি হচ্ছে৷ আবার বাজারে তেলের সরবরাহও অনেক কম৷ কিন্তু আমার জানামতে তেলের পর্যাপ্ত মজুত আছে৷ তারপরও বাজরে যা চাহিদা তার ২০ শতাংশ সরবরাহ আছে৷ তাহলে বাজারে তো একটা সংকট আছে৷''

তিনি জানান, ভোজ্য তেল ব্যবসায়ীরা তাদের সঙ্গে বৈঠক করে বলেছিলেন ২৫ ফেব্রুয়ারি থেকে তেলের সরবরাহ স্বাভাবিক হবে৷ কোনো সংকট থাকবে না৷ ‘‘কিন্তু তারা কথা দিয়েও সেই কথা রাখেননি৷ এখন আমরা একটি কমিটি করে বের করার চেষ্টা করছি সংকটটা কারা কীভাবে তৈরি করেছে৷ সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব,” বলেন তিনি৷

তবে এর বাইরে রোজার অন্যান্য আমদানি পণ্যের বাজার পরিস্থিতি ও সরবরাহ স্বাভাবিক আছে বলে মনে করছেন  মোহাম্মদ আলীম আখতার খান৷ চিনি, ছোলা, খেজুর পর্যাপ্ত আছে এবং গত বছরের তুলনায় দামও কমপক্ষে ১০ শতাংশ কম বলে দাবি তার৷ বলেন, ‘‘এটা সম্ভব হয়েছে সরকারের আগাম ঋণপত্র খোলার ব্যবস্থা এবং শুল্ক সমন্বয়ের কারণে।”

আমদানি করা এত ভোজ্যতেল কোথায়?

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের তুলনায় এবার এই সময়ে দেড় লাখ টন বেশি সয়াবিন তেল আমদানি হয়েছে৷ তারপরও বাজারে তেলের সরবরাহে ঘাটতি তৈরি হয়েছে৷ এর কারণ কী? অভিযোগ রয়েছে চট্টগ্রাম বন্দরে মূল জাহাজ থেকে তেল খালাস করার পর তার বড় একটি অংশ ছোট জাহাজে করে সাগরে ভাসিয়ে রাখা হয়েছে৷ গুদামে এনে রাখলে অভিযানে ধরা পড়ার সম্ভবনা থাকে, তাই দাম বাড়াতে আমদানিকারকরা এমন কৌশল নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে৷

বাংলাদেশে যে চারটি শিল্পগ্রুপ এই আমদানি করা ভোজ্য তেলের বাজার নিয়ন্ত্রণ করে তার একটি মেঘনা৷ মেঘনা গ্রুপের জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) মজিবুর রহমান এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘‘বাজারে যারা খুচরা বিক্রি করেন তারা খোলা তেল নিতে চান৷ কারণ খোলা তেলে ব্যবসা বেশি। ফলে বেতালজাত সয়াবিন তেল তারা নিতে চান না। আর সরবরাহও কম ছিল। তবে এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসছে৷ আশা করি এক সপ্তাহের মধ্যে সংকট কেটে যাবে।”

তিনি দাবি করেন, পরিস্থিতি সামাল দিতে তারাও নিজস্ব ট্রাকে করে শহরের ১০ থেকে ১২টি স্পটে বোতলজাত সয়াবিন তেল সরাসরি বিক্রি করছেন৷ তবে সরকারের নির্ধারিত দামে তেল বিক্রি করত লোকসানে পড়ছেন বলে জানান৷ ‘‘তারপরও মানুষের কথা চিন্তা করে আমরা সরবরাহ বাড়িয়ে দিচ্ছি.” বলেন তিনি।

কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সিনিয়র সহ সভাপতি এস এম নাজের হোসাইন বলেন, ‘‘কয়েকটি পণ্যে এবার সংকট তৈরি হয়েছে। এরমধ্যে লেবু, বেগুনসহ আরো কয়েকটি পণের দাম অনেক বেড়েছে। আবার আলু , পোঁয়াজসহ আরো কিছু পণ্যের দাম ঠিক আছে। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে সয়াবিন তেল নিয়ে৷

বাণিজ্য উপদেষ্টাকে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, এক সপ্তাহের মধ্যে সরবরাহ স্বাভাবিক হবে। আরো এক সপ্তাহ সময় কেন দেয়া হবে এই নিয়ে প্রশ্ন নাজের হোসাইনের৷ জন্য সরকারের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা না নেয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘‘পর্যাপ্ত আমদানি থাকার পরও পরিস্থিতি কারা অস্বাভাবিক করলো তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না৷ আমদানিকারক ও ডিলারদের আসাধু সিন্ডিকেট আগের মতই তৎপর আছে৷ বাজারে কেনো মনিটরিং নাই৷ সরকারের এজেন্সিগুলো তৎপর নয়৷ তারা নানা প্রটোকলে ব্যস্ত৷ ফলে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

বিনোদন

আমি জোকস বলা বন্ধ করে দিয়েছি, মানুষ বিরক্ত হয়: শাহরুখ খান

গত সোমবার রাত তারকাদের উপস্থিতিতে ঝলমল করছিল নেটফ্লিক্সের প্রাঙ্গণ। নেটফ্লিক্স ইন্ডিয়ার ‘নেক্সট অন নেটফ্লিক্স’ শীর্ষক আয়োজনে ঘোষণা করা হয় চলতি বছরে আসন্ন সিরিজ ও ছবির নাম। আর দেখানো হয় সিরিজ ও ছবির টিজার। এই রাতে একঝুড়ি বিনোদন নিয়ে হাজির ছিল নেটফ্লিক্স। কে ছিলেন না এ অনুষ্ঠানে—জিনাত আমান, শাহরুখ খান, সাইফ আলী খান, আর মাধবন, কপিল শর্মা, সিদ্ধার্থ, জয়দীপ অহলাওয়াত, ভেঙ্কটেশ, রানা দজ্ঞুবাতি, অর্জুন রামপাল, রাজকুমার রাও, পত্রলেখা, সানিয়া মালহোত্রা, ফাতিমা সানা শেখ, ঈশান খট্টর, ইব্রাহিম আলী খান, বাণী কাপুর, শেফালি শাহ, দিব্যেন্দু, ইয়ামি গৌতম, প্রতীক গান্ধী, পুলকিত সম্রাট, কীর্তি সুরেশ, খুশি কাপুরসহ আরও তারকার আগমনে এই রাত হয়ে উঠেছিল বিশেষ।

খেলা

তিলকপুরের-সেই-মাঠেই-ফুটবল-খেললো-নারীরা

সফিউল আলম সফি, আক্কেলপুর (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি : অবশেষে সকল বাধা বিপত্তি কাটিয়ে  তিলকপুরের সেই খেলার মাঠে ফুটবল খেললো নারী খেলোয়াড়রা। ওই খেলায় জয়লাভও করেছে জয়পুরহাট জেলা প্রমিলা ফুটবল দল। তারুণ্যের উৎসব উপলক্ষে বুধবার বিকেলে জয়পুরহাট জেলার আক্কেলপুর উপজেলার তিলকপুর উচ্চ বিদ্যালয় খেলার মাঠে নারী (প্রমিলা) ফুটবল খেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

ওই খেলার মাঠে দুপুর থেকে জমায়েত হতে শুরু করে নারী ও পুরুষ দর্শকরা। দর্শকে কানায় কানায় পরিপূর্ণ হয় সেই খেলার মাঠ। আক্কেলপুর উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে তারুণ্যের উৎসব উদযাপন উপলক্ষে প্রমিলা ফুটবল খেলার আয়োজন করা হয়। সেই খেলায় অংশ গ্রহন করেন ঢাকা জেলা প্রমিলা ফুটবল দল এবং জয়পুরহাট জেলা প্রমিলা ফুটবল দল অংশ গ্রহন করে। খেলায় ১-০ গোলে জয়পুরহাট জেলা প্রমিলা ফুটবল দল চ্যাম্পিয়ন হয়।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মনজুরুল আলমের সভাপতিত্বে ওই খেলায় প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন, জেলা প্রশাসক (ডিসি) আফরোজা আকতার চৌধুরী। বিশেষ অতিথি ছিলেন, পুলিশ সুপার মুহম্মদ আব্দুল ওয়াহাব, বিএনপির রাজশাহী বিভাগের সহ সাংগঠনিক সম্পাদক এ এইচ এম ওবায়দুর রহমান চন্দন, জেলা বিএনপির আহবায়ক গোলজার হোসেন, উপজেলা বিএনপির সভাপতি কামরুজ্জামান কমল, জেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারী এসএম রাশেদুল আলম সবুজসহ বিভিন্ন গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।

ঢাকা জেলা প্রমিলা ফুটবল দলের খেলোয়াড় মালা বলেন, এই মাঠে খেলতে এসে আমাদের খুব ভাল লাগছে। এতো দর্শক দেখে হেরে যাওয়ার কষ্ট ভুলে গেছি। প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় এ ধরনের খেলা আয়োজন করা উচিৎ। মেয়েরা অনেক ভাল কিছু করবে। মাঠে অনেক দর্শকের উপস্থিতিই প্রমাণ করে পুরুষদের পাশাপাশি মহিলা ফুটবল খেলাও জনপ্রিয়। জয়পুরহাট জেলা প্রমিলা ফুটবল দলের আরেক খেলোয়াড় রাত্রী বলেন, কোন ঝামেলা ছাড়াই আজকের খেলা সমাপ্ত হয়েছে। আমি বলতে চাই মেয়েদের কোন বাধা ছাড়া খেলতে দেওয়া উচিৎ।

বাংলাদেশের মেয়েরা সাফ চাম্পিয়ন হয়েছে। আমি দেশবাসীর কাছে অনুরোধ জানাই কখনো যেন মেয়েদের খেলায় বাধা না দেওয়া হয়। খেলা দেখতে আসা রিফাত হোসেন বলেন, আজ আমরা খুব সুন্দরভাবে মনোরম পরিবেশে মাঠে মহিলা দলের ফুটবল খেলা উপভোগ করছি। আমরা এই খেলাটি দেখার জন্য অধির আগ্রহ নিয়ে ছিলাম। মেয়েরা ক্রীড়ায় এগিয়ে যাচ্ছে। যা তাদের জন্য ইতিবাচক। এরকম খেলা ভবিষ্যতে আরও দেখতে চাই।

তিলকপুর বাচ্চা হাজী ক্বওমি মাদ্রাসার সহকারী পরিচালক হাফেজ মাওলানা আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, নারীদের ফুটবল খেলার বিষয়ে আমাদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির মাধ্যমে এমন ঘটনা ঘটেছে। আমরা নারী ফুটবলের বিরুদ্ধে নয় বরং অশ্লিলতার বিরুদ্ধে ছিলাম। যেখানে সরকার খেলাকে বৈধতা দিয়েছে, সেখানে সরকারের বিরুদ্ধে আমরা আর কখনো যাব না। এ ঘটনায় আমরা অনুতপ্ত। আজ শান্তিপূর্ণ ও উৎসব মুখর পরিবেশে নারীদের ফুটবল খেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। জয়পুরহাট মহিলা ফুটবল ক্লাবের কোচ কানাই চন্দ্র দাস বলেন, আমাদের একটাই চাওয়া এই খেলা কোথাও যেন বন্ধ না হয়। নারীরা খেলাধুলার মাধ্যমেও অনেক এগিয়ে আছে। খেলাকে কেন্দ্র করে যে সমস্যা তৈরী হয়েছিল তা শান্তি পূর্ণভাবে সমাধান হয়েছে। নারীদের ফুটবল খেলায় আর বাধা থাকলো না। এই খেলায় প্রমান করে ক্রীড়াঙ্গনে নারীদের সফলতা।

পুলিশ সুপার মুহম্মদ আব্দুল ওয়াহাব বলেন, বাংলাদেশ একটি সম্প্রীতি ও খেলা প্রেমীর দেশ। আজকের খেলার মাধ্যমে সেটা প্রমাণ হয়েছে। জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন এবং স্থানীয়দের সার্বিক সহযোগীতায় জয়পুরহাটবাসী আজ মেয়েদের একটি সুন্দর খেলা উপভোগ করেছে। জেলা প্রশাসক (ডিসি) আফরোজা আকতার চৌধুরী জানান, তিলকপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের খেলার মাঠে এর আগেও অনেক ফুটবল টুর্ণামেন্ট অনুষ্ঠিত হয়েছে। পূর্বে যে অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটেছিল তা দুই পক্ষের কিছু ভুল বোঝাবুঝির কারণে ঘটেছিল। ঐ দিন নারী দলের খেলা ছিল না। 

খেলাটি পরের দিন হওয়ার কথা ছিল। তারা ক্ষমা চাওয়াই বিষয়টি সমাধান হয়েছে। আবারও পুরোদমে এই মাঠে মহিলা (প্রমিলা) দলের ফুটবল অনুষ্ঠিত হলো। উল্লেখ্য, গত ২৮ জানুয়ারী ওই বিদ্যালয় মাঠে নারীদের ফুটবল খেলা নিয়ে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।

সেই ঘটনায় দেশ ও বিদেশের গণমাধ্যমে আলোচনা-সমালোচনা হয়। সরকারের পক্ষ থেকে প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দেওয়া হয়েছিল। গঠিত হয়েছিল দুটি তদন্ত কমিটি। পরে ভাঙচুরের ঘটনায় ভুল বোঝাবুঝি কারনে হয়েছে জানিয়ে অনুতপ্ত হয়ে অবশেষে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়েছেন ভাঙচুরকারীরা।